মেঘালয় সফরনামাঃ দ্বিতীয় পর্ব (ডাউকি)
![]() |
স্নোনেংপেডেং এর সকাল |
সাসপেনশান ব্রীজে দাঁড়িয়ে স্নোনেংপেডেং এর ভোর দেখাঃ (১৬/০৮/২০১৮)
পরদিন একদম কাক ডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে পড়লাম । উঠে যা দেখলাম তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না । গতরাতে যেখানে ক্যাম্পিং করতে দেখেছি, ভোরে উঠে দেখি সারারাতের প্রবল বর্ষণে সেখানে পানি উঠে গেছে আর সেই সাথে তাঁবুগুলোও উধাও । এই প্রথম ফিল করলাম যত্রতত্র ''ক্যাম্পিং করা যে দারুণ একটা আইডিয়া" এই কথাটা পুরোটা সত্য না । যারা নদীর তীরে ক্যাম্পিং করেছিলো, গতরাতে তাদের কতটা বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছে সেসব ভেবেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম আমি ।
তখনও টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছিলো । ছাতা মাথায় দিয়ে আমি একাই নেমে গেলাম নদীর তীরে । নদীর জলে পা ভিজিয়ে অদূরের পাহাড়গুলো দেখছিলাম । পাহাড়ের খাঁজে-খাঁজে মেঘেরা ভেসে বেড়াচ্ছে আর এই পাশে সাসপেনশন ব্রীজটা বাতাসে হালকা দুলছে । আমার দেখা অন্যতম শ্রেষ্ঠ সকাল ছিলো এটা । দেখে মনে হচ্ছিলো যেনো চারিদিকে সৌন্দর্যের আধার । মেঘালয় ট্রিপের অংশ হিসেবে এক রাত স্নোনেংপেডেং থাকাটা একদম অবশ্য কর্তব্য হিসেবে আমি রায় ঘোষণা করলাম সাথে সাথেই ।
সবাই মিলে সাসপেনশন ব্রীজের উপরে চলে গেলাম । কোন ভীড় ছিলো না । আমরাই ৫ জন ছিলাম শুধু । এতোক্ষণ নীচে থেকে নদী, পাহাড় বা এই ব্রীজটা যেমন লাগছিলো, ব্রীজের উপরে দাঁড়িয়ে যখন একই জিনিসগুলো দেখছিলাম, সৌন্দর্যের আলাদা একটা মাত্রা যুক্ত হলো যেনো । ব্রীজের উপরে থেকে যেদিকেই তাকাই না কেনো অপূর্ব সব দৃশ্য চোখে পড়ছিলো । খুবই ভালো লেগেছে সত্যি বলতে । কিছুক্ষণ ফটোশ্যুট করে সবাই হোটেলে ফিরে এলাম । ব্রেকফাস্ট সেরে হোটেল ত্যাগ করলাম । আমাদের আজকের প্ল্যান হলো সারাদিন ডাউকির কয়েকটা দর্শনীয় পয়েন্ট ঘুরে রাতে চেরাপুঞ্জি গিয়ে ডাবল ডেকার রুট ব্রীজের কাছে কোন একটা কটেজে রাত্রিযাপন করবো ।
![]() |
সাসপেনশান ব্রীজের উপরে |
![]() |
ব্রীজের উপরে থেকে চারিদিকের দৃশ্য |
হোটেল থেকে চেক আউট করে এবার কার রিজার্ভ করার পালা । নতুন একটা ঝামেলায় পড়লাম । আমরা জেনে গিয়েছিলাম মেঘালয়ে যেখানেই যাই না কেনো, কার ভাড়া লাগে ২০০০-২৫০০ রুপী । কিন্তু আমাদের এই প্ল্যানে তো কেউ ৩৫০০ এর নীচে রাজিই হচ্ছে না । কাহিনী কি ! এসব ঝামেলা মিটমাট করতে গিয়েই অনেকটা দেরি হয়ে গেলো । অবশেষে একটা কার ফিক্সড করলাম ৩০০০ রুপীতে । তাও সেটা চেরাপুঞ্জি পর্যন্ত যাবে । জনপ্রতি ভাড়া এলো ৬০০ রুপী ।
২০০০-২৫০০ রুপীর আসল কাহিনী হলো এটাই যে ধরেন আপনি ডাউকিতে আছেন আর শুধুমাত্র ডাউকিতেই সারাদিন ঘুরবেন, সেক্ষেত্রে এই রেট নেবে । এটা চেরাপুঞ্জি বা শিলং এর ক্ষেত্রেও তাই । কিন্তু আপনার প্ল্যান যদি এমন হয় যে আপনি সারাদিন ডাউকি ঘুরে সবশেষে চেরাপুঞ্জি বা শিলং যাবেন, সেক্ষেত্রে ভাড়া ৩০০০+ হয়ে যায় । অথবা সারাদিন শিলং/চেরাপুঞ্জি ঘুরে ড্রপ নেবেন ডাউকিতে, তাহলেও ভাড়া বেড়ে যাবে । ডাউকি-শিলং-চেরাপুঞ্জি; মেঘালয়ের এই তিনটা মেজর পয়েন্ট অনেক দূরে দূরে অবস্থিত । আর এটাই একমাত্র কারণ ভাড়া বৃদ্ধির ।
উমক্রেম ফলস(Umkrem Falls, Meghalaya):
যখন আমরা কারে চেপে বসি তখন প্রায় সকাল সাড়ে নয়টা বাজে । আধাঘণ্টা পরে আমরা এসে উপস্থিত হলাম উমক্রেম ফলসের সামনে । জীবনের প্রথম জল পতনের দিক থেকে এতো বড় কোন ঝর্ণার সামনে দাঁড়ালাম । নিয়মিত বৃষ্টি হবার দরুণ ডাউকির ঝর্ণাগুলোও ছিলো একদম পূর্ণযৌবনা । অসাধারণ! ঝর্ণা দেখেই মন-প্রাণ ভরে গেছে একেবারে । আহ কি সুন্দর ! ইউটিউব, ফেসবুকে যেমনটা দেখে গিয়েছিলাম, ঠিক তারচেয়েও বেশি সজীব, তারচেয়েও বেশি জীবন্ত । ওখানে দাঁড়িয়ে ছবি তোলাই একটা ঝামেলা হয়ে গিয়েছিলো । পানির স্রোত এতো জোরালো ছিলো যে ওই জায়গাজুড়ে হাওয়ায় দৃশ্যমান বাষ্পকণা ঘুরে বেড়াচ্ছিলো । ক্যামেরায় পানি লেগে যায় । এতোই ভালো লাগছিলো যে প্রায় চোখের পলকেই ৪৫ মিনিট চলে গেলো । আমাদের মুভ করতে হবে এখন । সারাদিনে অনেক কিছু দেখার আছে । একটা ঝর্ণা নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে কিভাবে ! যেতে ইচ্ছে না করলেও যেতে হলো । সবাই ফের কারে চেপে বসলাম । আমাদের পরবর্তী গন্তব্য বোরহিল ফলস ।
বোরহিল ফলস(Borhill Falls):
উমক্রেম ফলস থেকে কারে চেপে বোরহিলে যেতে প্রায় ১২-১৫ মিনিটের মতো সময় লাগলো । এই ঝর্ণা দেখি আরো বিশাল । এখানেও ৪৫ মিনিটের মতো ছিলাম । সময়গুলো যেনো দৌঁড়ে দৌঁড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিলো । অথচ ঝর্ণা দেখে তৃপ্তি মিটছিলো না । কি অপূর্ব সুন্দরী এই ঝর্ণাগুলো ! এখানে দেখলাম এক জায়গায় রংধনু দেখা যাচ্ছে । সবমিলিয়ে দারুণ লাগলো ঝর্ণাটা । সাড়ে এগারোটা নাগাদ পরবর্তী গন্তব্যের জন্য ফের কারে চেপে বসলাম আমরা ৫ জন ।
![]() |
বোরহিল ফলস |
মাওলিনং ভিলেজ(Mawlynnong Village):
বোরহিল ফলস থেকে মাওলিনং আসতে প্রায় এক ঘণ্টার মতো চলে গেলো । সত্যিই বেশ পরিচ্ছন্ন একটা গ্রাম এই মাওলিনং । ২০০৩ সালে একে এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয় । প্রচুর দর্শনার্থী সমাগম হয় এখানে রোজ । প্রতিটি বাড়িতেই সুন্দর ফুলের বাগান রয়েছে । এজন্য এটি ''Gods own Garden'' নামেও পরিচিত । বেশ কিছু শো পিসের দোকান ছিলো সেখানে । এই গ্রামে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি ১০ রুপী করে প্রবেশ ফি দিতে হয় ।
![]() |
মাওলিনং ভিলেজ |
মাওলিনং ভিলেজ |
মাওলিনং ভিলেজ |
এখানেও প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো ঘোরাঘুরির সময় পেয়েছিলাম । মানে যেখানেই গাড়ি থেকে নামি না কেনো, চোখের পলকেই যেনো সময় শেষ হয়ে যাচ্ছিলো । আমরা এই স্বল্প সময়ে যতোটা পসিবল ঘুরে ঘুরে এই গ্রাম টা দেখলাম । সোয়া একটার দিকে গ্রাম ত্যাগ করে আমাদের পরবর্তী গন্তব্য চেরাপুঞ্জির তিরনা গ্রাম অভিমুখে যাত্রা শুরু করলাম ।
তিরনা গ্রাম(Tyrna Village):
আসলে মেঘালয় ট্যুরের প্রধান আকর্ষণই হলো চেরাপুঞ্জি ট্রিপ । মেজর স্পটগুলো সব এখানেই । তাই এই দিকেই সময় বেশি চলে যায় । এতো সুন্দর সুন্দর সব দৃশ্য চারিদিকে ছড়ানো যে চোখের পলক ফেলতে মন চাইবে না । মাওলিনং থেকে চেরাপুঞ্জি যাত্রাপথে পথিমধ্যে আমরা কয়েক জায়গায় থেমে ফটোশ্যুট করলাম । সত্যি বলতে মাওলিনং গ্রামের চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর ছিলো এই রোড ট্রিপ টা । চারিদিকে যেনো সৌন্দর্যের আধার । এতো ভালো লেগেছে এই জার্নিটা যা বলার না । মাঝেমাঝে এমন হচ্ছিলো যে আশেপাশে কিছু দেখা যাচ্ছে না । রাস্তার উপরে ঘন মেঘ এসে জড় হয়েছে । সেই মেঘের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে গাড়ি চলছে । আমরা হাত বাড়িয়ে মেঘ ধরছি । কিন্তু হাতটা ভিজিয়ে দিয়ে মেঘগুলো যেনো কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে । একটু পরেই দেখবো রাস্তা পরিষ্কার । কোথাও মেঘ নেই । আবার একটু পরে দেখবো আশেপাশে কিছুই দেখা যাচ্ছে না । মনে হচ্ছিলো কোন একটা দুষ্টূ বাচ্চা আমাদের সাথে লুকোচুরি খেলছে ।
যে চোখ সিলেট দেখে অভিভূত হয়, মেঘালয় দেখে সেই চোখের ঝলসে যাওয়ার কথা । এটা নিছক তত্ত্বকথা না হয়ে প্রায়োগিক সত্য হলে আমার চোখটা আজ আর আস্ত থাকতো না হয়তোবা । মেঘালয় ঘুরে মনে হয়েছে এটা যেনো একজন মহারাণী আর সিলেট স্রেফ তার একটা করদ প্রজা । মহারাণীর বৈভবের ছিটেফোঁটা পেয়েই যে করদ প্রজা এতো রুপসী তাহলে মহারাণী কতটা রুপসী হতে পারে ভাবুন তো ! সবচেয়ে অদ্ভুত যে অনুভূতিটা হচ্ছিলো... মনে হচ্ছিলো মেঘালয় শুধু চোখের শান্তিই এনে দিচ্ছে না, বরং মনের মাঝেও কেমন একটা শান্তি শান্তি ভাব কাজ করেছিলো । এই ট্রিপের পুরোটা সময় কেনো যেনো খুব সুখী সুখী ফিল হচ্ছিলো ।
মেঘালয়ের পথ |
রাস্তার আশেপাশে সাদা যা দেখছেন, সবই মেঘ |
মেঘালয়ের পথ |
মেঘালয়ের পথ |
মেঘালয়ের পথ |
যাহোক, এভাবে হেলে দুলে সব দেখতে দেখতে চেরাপুঞ্জি এসে যখন পৌঁছাই তখন সাড়ে চারটার মতো বাজে । ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে বিদায় করে দিলাম । আমাদের ক্ষুধা লেগে গেছে খুব । একটা হোটেল খুঁজে খেয়ে নিলাম সবাই মিলে । প্রকৃতির মাঝে হোটেল, সেই হোটেলের নীচে দিয়ে মেঘেরা ঘুরে বেড়াচ্ছিলো । আর আমরা মেঘেদের উপরে বসে খাচ্ছিলাম । বিষয়টা কিছুটা এমনই ছিলো । মনে হচ্ছিলো মেঘালয় আমাকে হিপনোটাইজ করে ফেলেছে । যা দেখি তাই ভালো লাগে যেনো ।
খাবার হোটেলের ভিউ |
খাবার হোটেলের ছাদে থেকে তোলা |
![]() |
আমাদের দুপুরের খাবার |
ডাবল ডেকার রুট ব্রীজের ট্রেকিং যেখানে থেকে শুরু হয়েছে সেই গ্রামের নাম হলো তিরনা । খাওয়া শেষে আরেকটা ট্যাক্সি (ভাড়া ৪০০রুপী) নিয়ে রওনা দিলাম তিরনা (Tyrna) গ্রামের উদ্দেশ্যে । দুই ভাই দিলেন ২০০ রুপী, আমরা তিন বন্ধু দিলাম ২০০ রুপী(জনপ্রতি ৬৭ রুপী) । সেখানে থেকে ট্রেকিং করে চলে যাবো ডাবল ডেকার রুট ব্রীজের কাছে । আর সেখানেই কোন একটা হোমস্টে তে আজকের রাত কাটাবো । এটাই প্ল্যান । কিন্তু প্ল্যান অনুযায়ী কাজ হলো না । আমরা যখন তিরনাতে গিয়ে পৌঁছালাম তখন ঘড়িতে সাড়ে পাঁচটার মতো বাজে । ওখানকার স্থানীয়রা আমাদের আর ট্রেকিং শুরু করতে দিলো না । পাঁচটার পরে ট্রেকিং শুরু করা নিষেধ । এই সময়ে যদি নিতান্তই কেউ ট্রেকিং করতে চায় তবে তাকে অবশ্যই গাইড নিতে হবে । আমরা অনেক জোরাজুরি করলাম । কিন্তু গাইড ছাড়া যেতে দিলো না । তখন ভেবেছিলাম এখানে হয়তো এরা সিণ্ডিকেট বানিয়েছে কয়টা পয়সা কামানোর জন্য । সিণ্ডিকেট কিছুটা আছে সত্য, তবে পুরোটা সত্য না । আর এই সিন্ডিকেট আমাদের দেশের যেকোন বি গ্রেড ট্যুরিস্ট স্পটের তুলনায়ও একদম যৎসামান্য । এটা বুঝতে পেরেছিলাম পরদিন সকালে ট্রেকিং শুরু করার পরে।
আজকে আর ট্রেকিং শুরু করলাম না । ওখানেই একটা হোমস্টে তে আমরা পাঁচজন উঠে গেলাম । জনপ্রতি ভাড়া এলো ২৬০ রুপী । অসাধারণ একটা জায়গার মাঝে অবস্থিত খুব সাধারণ একটা হোমস্টে । হোমস্টে থেকে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ । চারিদিকে পাহাড়, বন আর টিপটিপ বৃষ্টি । আমাদের হোমস্টে থেকে অদূরেই একটা ঝরণাও চোখে পড়ছিলো । ভাবতে পারেন কি অসাধারণ ছিলো সেই পরিবেশ টা ! হোটেলের বারান্দায় দাঁড়ালেই মনটা কি যেনো একটা আনন্দে নেচে উঠে ।
আমাদের হোমস্টের ফ্রণ্ট ভিউ |
হোটলে উঠে ফ্রেশ হতে হতেই সূর্য ডুবে গেলো । নিজেদের মাঝে কিছুক্ষণ গল্প-গুজব করলাম । আমরা তিনজনে এক রুমে আর তারা দুইজন আরেক রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে গেলেন । আগামীকালই তনু ভাই আর হাসান ভাই এর সাথে আমাদের শেষ দিন । ভাইদের ছুটি শেষ, তারা ঢাকায় ফিরে যাবেন । আমাদেরও কিছুটা মন খারাপ এজন্য । ৫ জনে বেশ আন্তরিকতা হয়ে গিয়েছিলো । কি আর করার ! তাদেরও যে কোন দিক থেকেই ফেরার ইচ্ছে ছিলো না, তা তাদের দিকে না তাকিয়েই বলা যায় । মেঘালয়ের আরো কত কি দেখা বাদ রয়ে গেলো, অথচ তাদের বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হবে ।
জীবন পদে পদে যে জিনিস টা আমাদের শেখায়, আজকে সেই জিনিস টা আবার দেখলাম । ভাইয়েরা চাকরিজীবী মানুষ, আর্থিক সঙ্গতি ভালো, কিন্তু ছুটি কম । আমরা ৩ বন্ধু শিক্ষার্থী, আর্থিক সঙ্গতি ভালো না, কিন্তু ছুটি অনেক । টাকার সমস্যা নিয়ে আমরা তিনজন আর সময়ের সমস্যা নিয়ে তারা দুইজন তবুও পথে নেমেছি, নিজের সীমাবদ্ধতাটুকু মেনে নিয়েই এতো বড় পৃথিবীর যতোটা দেখা যায়, সেই প্রচেষ্টা ব্যক্ত করেছি । অনেকেই হয়তোবা এতোটুকুও পারেনি । কারণ আমি খুব স্পষ্টভাবেই বুঝে গিয়েছি যে জীবন থেকে সমস্যা ফুরাবে না । প্রতিবন্ধকতাকে তাই পাশ কাটিয়ে নয়, বরং সাথে নিয়েই যতোটা সম্ভব এগিয়ে যেতে হবে । সমস্যা কখনো সমাধানে তিরোহিত হয়না, তিরোহিত হয় আর বড় সমস্যার মুখোমুখি হবার মাধ্যমে ।
যাহোক, দুপুরের খাবার টা আনলিমিটেড ছিলো । তাই রাতে কারো তেমন ক্ষুধা ছিলো না । হালকা স্ন্যাকস জাতীয় খাবার খেয়ে নিলাম । ততোক্ষণে ডিজলিং টা ক্যাটস এণ্ড ডগসে রুপান্তরিত হয়েছে । আমাদের হোমস্টে ছিলো টিনশেড । সুতরাং টিনের চালে প্রবল বেগে বৃষ্টির শব্দে কেমন একটা ঘোর লাগিয়ে দিচ্ছিলো । এই বৃষ্টি জিনিস টা পাগলের মতো ভালো লাগে আমার । প্রেয়সীর নূপুরের আওয়াজ নাকি টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ, কোনটা বেশি ভালো লাগে... আমি কনফিউজড । একটা প্রেয়সী থাকলে টেস্ট করে দেখতাম । আচ্ছা বলতে পারেন কখনো দুইটা শব্দ একসাথে শুনতে পারলে কেমন লাগতো?
আজকের খরচঃ (১৬/০৮/১৮)
১। মাওলিনং এন্ট্রি ফি = ১০/-
২। ট্যাক্সি ভাড়া = ৬৬৭/-
৩। সারাদিনের খবার খরচ = ১৯০/-
৪। হোমস্টে ভাড়া = ২৬০/-
......................................................
মোট= ১১২৭ রুপী (জনপ্রতি)
মেঘালয় সফরনামা
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন